মানচিত্রের দিকে একটু তাকাতে হবে আমাদের। আপনি যেভাবে বললেন সেভাবে বাংলাদেশে বাঁধ দিয়ে কোনো লাভই হবেনা।
কারণ,
ভারত উজানের দেশ, পাহাড়ে ঘেরা। আর বাংলাদেশ সমতল ভূমি, ভাটির দেশ। সুতরাং ভারতের বাঁধ খুলে দিলে সেই পানি বাংলাদেশে আসার পর যখন বাংলাদেশের বাঁধে জমা হবে তখন বাংলাদেশের বাঁধের উপর প্রচুর পরিমাণে চাপ বেড়ে যাবে। বাঁধের উপর প্রচুর চাপের কারণে এবং বাঁধ বন্ধ রাখার ফলে বাঁধ ভেংগে সেই পানি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে।
যদি বাঁধ না ভাঙ্গতে পারে তাহলে পানি তার গতিপথ পরিবর্তন করে বাঁধের আশেপাশের অঞ্চল দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে ঢুকে পড়বে। অর্থাৎ ভারত উজানে থাকার কারনে ভারত থেকে আসা পানি কখনোই ভারতে প্রবেশ করবে না। বাংলাদেশে থাকা বাঁধেই জমে থাকবে। সুতরাং এটি যেভাবেই হোক বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করতে চাইবে।
তবে বাংলাদেশ যা পারে সেটি হলো, নিজ দেশের নদী খনন করা, খাল খনন করা। নতুন খাল তৈরি করে পানি ধরে রাখার চেষ্টা করা এবং যতো দ্রত হোক এই পানিকে বঙ্গোপসাগরে পাঠানো যায় সেই ব্যবস্থা করা।
নদির পাজর পাজর উঁচু করে মোটা করেও বাঁধ দেওয়া যেতে পারে। যাতে সেই পানি নদির মধ্যেই থাকে। নদির বাইরে যেনো না বেরোতে পারে। এতে করে পানির কন্ট্রোল আসবে তবে নদীর গভীরতা বেড়ে যেতে পারে।
ফলে নদীর গভীর তলদেশ থেকে বাঁধ কেটে যেতে পারে। সেইজন্য নদীর মধ্যে বাঁধের পাজর পাঁজর পাথর ফেলে দিয়ে গেঁথে দিলে আর নদীর তলদেশ থেকে বাঁধ কাটার সম্ভাবনা টা কম থাকবে।
সকল মানুষদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া রইলো। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রশমিত হোক। আমিন।
বাঁধের সামনে আরেকটা বাধ দিলেও কোনো লাভ হবেনা। কারণ পানি কখনোই স্রোতের বিপরীতে যায় না। উল্টো পানি ওভার-ফ্লো করে বাংলাদেশ প্লাবিত হবে।
কারন ভারত থেকে বাংলাদেশের ভূমি গড়ে 72 ফিট নিচু। ভালো হবে নদীর নদীয়তা (গভীরতা) ঠিক করলে। আমাদের দেশের অনেক নদিই তার আগের অবস্থায় নেই। অনেক নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। তার একটাই কারন, নদী দূষণ এবং নদি ভরাট বা দখল। নদীর নদীয়তা ফিরিয়ে আনলে ভারত যতই পানি ছাড়ুক না কেনো বাংলাদেশ কখনোই প্লাবিত হবেনা।
আরেকটা কথা: নদী দূষণ এবং নদি দখল বন্ধ করুন। আমরা নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনছি। পরে দোষ দেই অন্য কারও। এইযে সব যায়গায় নদি ভরাট করে নদি দখল করার হিড়িক পডছে। কোই তখন তো কাওকে প্রতিবাদ করতে দেখিনি। আসুন আমরা সকলে মিলে নদীর নদীয়তা আর গভীরতা ফিরিয়ে আনি। নদি ভরাট করে যারা নদি দখল করছে তাদের প্রতিহত করি। তবেই আমাদের দেশ রক্ষা পাবে।
ধন্যবাদ।
বাঁধের বিপরীতে বাঁধ দেয়া বোকামি ছাড়া কিছুই না। বরং ভাঙ্গন প্রবণ নদী সমূহে চায়না কর্তৃক প্রস্তাবিত প্রকল্পের ন্যায় প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে। নিজের দেশের ভূমি রক্ষার্থে নদীর প্রশস্ততা অপরিবর্তিত রেখে দুই পাড়ে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ করে বাঁধের উপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য মহাসড়ক নির্মাণ করা যেতে পারে। পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের সুকিয়ান সিটির মতো সুন্দর নগরীর আদলে দুপাড়ে পরিকল্পিত স্যাটেলাইট শহর, নগর ও নৌবন্দর, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, পর্যটন কেন্দ্র, বাঁধের দুই পাশে সমুদ্রসৈকতের মতো মেরিন ড্রাইভ করা যেতে পারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দুই পাড়ে থানা, কোস্টগার্ড ও সেনাবাহিনীর জন্য ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। নদী শাসন, ভাঙন প্রতিরোধে নদীর গভীরতা বাড়ানোর জন্য ড্রেজিং ব্যবস্থা চালু রাখা যেতে পারে এই ক্ষেত্রে সরকার কোষাগার থেকে ব্যয় নির্বাহ না করে ইজারা দিয়ে করালে বরং রাজস্ব আদায় হবে তাতে সারা বছর নৌ চলাচলের ব্যবস্থাও সুগম হবে। নদী থেকে সৃষ্ট খালবিল গুলোকে রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে আধুনিক কৃষি সেচ ব্যবস্থা ও মাছ চাষ প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে। এতে কৃষি জমি উদ্ধার হবে, হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা হবে, প্রতি বছরে হাজার কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হবে, লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
এই সব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও ভারতের সাথে শুষ্ক মৌসুমের জন্য পানি বন্টন চুক্তি হওয়া দরকার কারণ দেশের অধিকাংশ নদী সমূহ ভারত থেকে আগত। প্রয়োজনে ১৯৯৭ সালের জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী ভারতকে তা স্বাক্ষরের আহ্বান করা যেতে পারে কারণ এই সনদের অংশীদার দেশগুলোকে অভিন্ন নদ-নদীর ব্যবহারে কী কী নীতি অনুসরণ করতে হবে, তা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। বিশেষ করে ভাটির দেশগুলোর অধিকারের সুরক্ষা দিয়েছে। আর তাতেও সম্মতির অভাব দেখা দিলে, বিনা প্রতিদানে ভারতকে দেয়া সুবিধা সমূহ- ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট, বন্দর, নৌপথ ব্যবহারের সুযোগ প্রত্যাহার করে নদীর বিনিময়ে ট্রানজিট নীতি গ্রহণ করা যেতে পারে।
বাজেট কোন বিষয় না একজন দেশপ্রেমিক থাকাটা বিশাল বিষয় যে নিজের পেটের দিকে না তাকিয়ে দেশের ১৮ কোটি মানুষের দিকে তাকাবে।
আমি আশাবাদী, আমি স্বপ্ন দেখি, সুদিন আসবেই আজ নয়তো কাল।
ধন্যবাদ